25 Feb 2025, 10:31 pm

ডেঙ্গুর প্রথম ওষুধের ট্রায়ালে আশা জাগানিয়া সাফল্য পেলো জনসন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : এডিস মশাবাহিত প্রাণঘাতী রোগ ডেঙ্গুর প্রথম ওষুধে আশা জাগানিয়া সাফল্য পাওয়া গেছে। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে আমেরিকান সোসাইটি অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড হাইজিনের বার্ষিক সভায় এই তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ওষুধ ও টিকা প্রস্তুতকারী কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসন।

জনসন অ্যান্ড জনসনের ইউরোপীয় শাখা জ্যানেসেনের প্যাথোজেন বিভাগের গবেষক মার্নিক্স ভ্যান লুক বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি তাদের তৈরি ডেঙ্গুর ওষুধটির মেডিকেল ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে এবং সেই ট্রায়ালের ফলাফল বেশ সন্তোষজনক।

মার্নিক্স ভ্যান লুক জানান, ১১ জন স্বেচ্ছাসেবী এই ট্রায়ালে অংশ নিয়েছেন। ট্রায়ারের প্রথম পাঁচ দিনের প্রতিনিদ এই তাদেরকে ওষুধের হাইডোজ সেবন করানো হয়েছে, তারপর স্বেচ্ছাসেবীদের সম্মতির ভিত্তিতে তাদের দেহে প্রবেশ করানো হয়েছে ডেঙ্গু ভাইরাসের একটি দুর্বল ধরন, যেটি স্বাস্থ্যের জন্য কোনো হুমকি সৃষ্টি করতে বা ছড়িয়ে পড়তে অক্ষম।

তারপর ফের ২১ দিন তাদেরকে ফের নিয়মিত তাদেরকে খাওয়ানো হয়েছে সেই ওষুধ।

ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ডেঙ্গু ভাইরাস প্রবেশের কয়েক দিন পর ১১ স্বেচ্ছাসেবীর নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সেই পরীক্ষায় ৬ জনের দেহে ভাইরাসের অস্তিত্বই পাওয়া যায়নি; বাকি ৫ জনের দেহে ভাইরাসটির অস্তিত্ব শনাক্ত হলেও তারা সবাই পরীক্ষার দ্বিতীয় পর্যায় অর্থাৎ ২১ দিনের আগেই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু ভাইরাসের ৪টি ধরন রাজত্ব করছে। রয়টার্সকে মার্নিক্স ভ্যান লুক জানিয়েছেন, এবার দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে প্রবেশ করবে জনসন অ্যান্ড জনসন এবং এই পর্যায়ে ডেঙ্গু ভাইরাসের সবচেয়ে প্রচলিত চারটি ধরনের ওপর ওষুধটির কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হবে।

ডেঙ্গু ভাইরাসের একমাত্র বাহক এডিস মশা। জলবায়ু পরিবর্তন ও তার প্রভাবে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও বৃষ্টিপাত বাড়তে থাকায় গত প্রায় দু’দশক বিশ্বজুড়ে এডিস মশার বিস্তার বাড়ছে, তার সঙ্গে বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও।

আবহাওয়াগত কারণে রোগের সবচেয়ে বেশি প্রকোপ পরিলক্ষিত হচ্ছে এশিয়ার মৌসুমি জলবায়ুর দেশগুলোতে। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলভূক্ত বাংলাদেশে চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজারেরও বেশি মানুষ।

ডেঙ্গুর কোনো ওষুধ এখনও বাজারে আসেনি; এটির কোনো স্বীকৃত চিকিৎসাপদ্ধতিও নেই। মূলত এই কারণেই হুমকি হয়ে উঠেছে রোগটি।

জনসন অ্যান্ড জনসনের ওষুধটি যদি বাজারে আসে, সেক্ষেত্রে সেটি হবে বিশ্বের ইতিহাসে ডেঙ্গুর প্রথম ওষুধ।

কিন্তু জনসন অ্যান্ড জনসনের ওষুধটি কি এশিয়ার মৌসুমি জলবায়ুর দেশগুলোতে ডেঙ্গুর প্রকোপ ঠেকাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে?

রয়টার্সের এ প্রশ্নের জবাবে ভ্যান লুক বলেন, ‘আমরা সবে মাত্র ওষুধটির প্রথম ট্রায়াল শেষ করেছি। আরও অন্তত দু’টি ট্রায়াল বাকি রয়েছে এখনও। তবে আমরা আশা করছি, এটির কার্যকারিতা বিশ্বের সব অঞ্চলে একই রকম হবে।’

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *